1. news1@channelmetrotv.com : admin :
সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ট্রোক হলে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করতেই হবে এনসিপি নেতার আঙ্গুল কেটে নিল সন্ত্রাসীরা এক ইলিশের দাম ১০ হাজার ৭০০ টাকা পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার মূল হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার। এলাকাজুড়ে মাইকিং করে নিজ ভাইয়ের সঙ্গে মারামারির ঘোষণা দিয়েছেন এক বৃদ্ধ। রোজা ও ইফতারের মাধ্যমে মনোনয়ন কামনা, সরগরম কুমিল্লা-৬ সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় জেলা কৃষকদল নেতা কারাগারে বিএনপির ১১৩ আসনে প্রার্থী বদলে রেকর্ড। শীর্ষ আলোচিত সর্ব মহলে ,নারায়নগঞ্জে ও পরিবর্তেনের ইঙ্গিত । “তারেক রহমান ঘোষিত এই ৩১ দফা হলো দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিবি কর্তৃক পৃথক পৃথক অভিযানে ১৪০০ (চৌদ্দশত) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ০৩ জন মাদক কারবারি গ্রেফতার।

স্ট্রোক হলে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করতেই হবে

রিপোটারের নাম
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

স্ট্রোক হলে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু হলে রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের মতে, দেশে প্রতি চারজনে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। মোট স্ট্রোকের ৮৯ শতাংশই ঘটে উন্নয়নশীল দেশে। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতি মিনিটে ১.৯ মিলিয়ন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ (নিউরন) মারা যায়। তাই স্ট্রোকের রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া গেলে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আজ রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক অফিসের কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে স্ট্রোক বিষয়ক তথ্য উপস্থাপন করেন ঢামেক হাসপাতালের এন্ডোভাসকুলার ও স্ট্রোক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহেদুর রহমান শিকদার। তিনি বলেন, স্ট্রোক দুই প্রকার, এর মধ্যে ইশকেমিক, অর্থাৎ রক্তনালী বন্ধ হয়ে ৮৫ ভাগ স্ট্রোক হয়, হিমোরেজিক ১৫ ভাগ।

তিনি আরও জানান, উন্নয়নশীল দেশে ৮৯ শতাংশ স্ট্রোক ঘটে। প্রতি মিনিটে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ (নিউরন) মারা যায়। তাই স্ট্রোকের রোগীদের জন্য সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া গেলে রোগীকে পুরোপুরি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আনা গেলে জীবন সুরক্ষা পায়। থেরাপির মাধ্যমে এসব রোগীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব বলেও জানান তিনি।

স্ট্রোক সকল বয়সের মানুষের হতে পারে জানিয়ে ডা. শাহেদুর রহমান বলেন, ‘তবে আশার কথা হলো, এসব রোগীদের চিকিৎসা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে দেশেই হচ্ছে। স্ট্রোক ইউনিট ছাড়া স্ট্রোকের সফল ও কার্যকর চিকিৎসা শতভাগ সম্ভব হয় না, এ কারণে আরও স্ট্রোক ইউনিট প্রতিষ্ঠার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

স্ট্রোকের সতর্কবার্তার বিষয়ে ধারণা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, স্ট্রোকের সতর্কসংকেত বোঝার জন্য একটি সহজ সূত্র হলো বি–ফাস্ট (B-FAST)। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন,

বি মানে ব্যালান্স (ভারসাম্য): স্ট্রোক হলে অনেকের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, হাঁটতে বা দাঁড়িয়ে থাকতে সমস্যা হয়,

ই মানে আই (চোখ): হঠাৎ করে এক বা দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে,

এফ মানে ফেস (মুখ): মুখ একপাশে বাঁকা হয়ে যেতে পারে। স্ট্রোকের রোগীদের মুখ এক দিকে বাঁকা হয়ে যায়।

এ মানে আর্মস (বাহু): হাত বা পা—যে কোনো একটি অঙ্গ দুর্বল হয়ে যেতে পারে, কখনো কখনো সম্পূর্ণ অবশ (প্যারালাইসিস) হয়ে যায়।

এস মানে স্পিচ (বাক): কথা বলতে না পারা, অথবা কথা বললেও জড়তা বা আটকে যায়।

টি মানে টাইম (সময়): এ ক্ষেত্রে সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময় নিজে কোনো লক্ষণ নয়, তবে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে জীবন ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাঁচানো যায়।

তিনি বলেন, স্ট্রোক হলে সবচেয়ে জরুরি হলো দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। মনে রাখতে হবে, বেঁচে থাকা মানে কেবল জীবিত থাকা নয়, বরং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা রক্ষা করা। তাই যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে।

আক্রান্তকে হাসপাতালে নিন, ৯৯৯ নম্বরে কল দিন

ডা. শাহেদুর রহমানের পরামর্শ, সচেতন বা শিক্ষিত ব্যক্তি যদি বুঝতে পারেন, কারও স্ট্রোক হয়েছে, তবে অবিলম্বে জরুরি নম্বর ৯৯৯ নম্বরে কল করতে হবে অথবা খুব দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

‘হাসপাতালে পৌঁছানোর পর সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়, যেমন—সিটি স্ক্যান ও এমআরআই। এরপর রোগীর অবস্থা অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা শুরু করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে পুনর্বাসন (রিহ্যাবিলিটেশন) খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যেখানে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হয় রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর জন্য।’

‘ডায়াগনোসিস নিশ্চিত করতে হাসপাতালে আসার পরপরই সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করা হয়। যদি রক্তক্ষরণের কোনো জটিলতা থাকে, তবে সিটি এনজিওগ্রাম বা ডিজিটাল সাবস্ট্রাকশন এনজিওগ্রাম (ডিএসএ) করা যেতে পারে।’

স্ট্রোক চিকিৎসায় দলগত কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকের কাজ হলো রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দেওয়া। নার্সের কাজ হলো রোগীর গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক মান (ভাইটাল) পর্যবেক্ষণ, যত্ন ও পুনর্বাসনে সহায়তা করা। ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য সহায়ক কর্মীদের ভূমিকা-ও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন রোগীকে পরীক্ষা বা অস্ত্রোপচারের জন্য নেওয়ার সময় সামান্য দেরিও মারাত্মক হতে পারে। কারণ, প্রতি মিনিটে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ (নিউরন) মারা যায়। তাই সময় নষ্ট না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াই জীবন বাঁচানোর একমাত্র উপায়।

চিকিৎসা সেবার মান নিশ্চিত ও রোগীদের খরচ কমাতে সরকারকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান ডা. শাহেদুর রহমান।

স্ট্রোক প্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ

মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রোগীরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না তাদের স্ট্রোক হয়েছে কিনা, এই সচেতনতা মানুষের মাঝে তৈরি করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিরোধ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক রোগের ক্ষেত্রে টাকা বা ভালো চিকিৎসা নিয়ে হয়তো সুস্থ হওয়া সম্ভব। কিন্তু স্ট্রোকের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না নিলে হয়তো মৃত্যু হতে পারে বা পঙ্গুত্বের জীবন বরণ করে নিতে হবে, অন্যের বোঝা হয়ে থাকতে হতে পারে। সেজন্য সচেতনতা ও প্রতিরোধ এই রোগের সবচেয়ে বড় সমাধান।

স্ট্রোকের চিকিৎসা ঢাকা বিকেন্দ্রীকরণের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পর এসেও স্ট্রোকের চিকিৎসা অনেকাংশেই ঢাকা কেন্দ্রীক। বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে স্ট্রোকের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।

স্ট্রোক নব্বই ভাগ প্রতিরোধযোগ্য

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম (পিএইচডি) বলেন; প্রতি চার জনে একজনের স্ট্রোক হয়, চাইলে এর হার চল্লিশে নামিয়ে আনা সম্ভব, চার জনে একজন না হয়ে চল্লিশে একজন হতে পারে। সচেতন হলেই এটি কমিয়ে আনা সম্ভব। খাদ্যাভ্যাস ও জীবন ধারা পরিবর্তন করে এই স্ট্রোক নব্বই ভাগই প্রতিরোধ করা সম্ভব। এতে আমাদের আর চিকিৎসা পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজনই হলো না।

তিনি আরো বলেন; সারাদেশে স্ট্রোক সেন্টার হওয়া প্রয়োজন এবং মানুষের ঘনত্বের উপর ভিত্তি করে সারাদেশকে স্ট্রোক সেন্টারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। স্ট্রোক প্রতিরোধের লক্ষ্যে সচেতনতার জন্য সামাজিক আন্দোলন তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে অধ্যাপক ডা. ফজলে এলাহী মিলাদ বলেন, অসংক্রামক রোগের ওষুধ বন্ধ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তিনি সুশৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জনের আহ্বান জানান।

ঢামেক হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, স্ট্রোকের সকল রোগী, বিশেষ করে বয়স্কদের সার্জারি করা সম্ভব হয় না। সেই সকল রোগীদের ফিজিক্যাল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা স্ট্রোকের চিকিৎসায় হটলাইন চালুর পরামর্শ দেন, একই সঙ্গে স্ট্রোক অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করার মত দেন।

প্রসঙ্গত, দেশে চিকিৎসা শিক্ষার বৈশ্বিক স্বীকৃতিকরণের (অ্যাক্রেডিটেশন) কার্যক্রম চলমান থাকায় ২৯ অক্টোবর দিবসটি পালন করা সম্ভব হয়নি। এর পরিবর্তে চার দিন পর আজ এই সচেতনতামূলক আয়োজন করা হয়।

ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের ডা. সুজন শরীফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
All rights reserved © 2025
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jp-b61d35f558d32a0f3936